অডোভা
প্রতি ৫ মিলিতে আছে-
বাসক ০.৩৮ গ্রাম
পিপুল ০.১৪ গ্রাম
দ্রাক্ষা ০.১৪ গ্রাম
হরীতকী ৭৩.২৪ মিলিগ্রাম
যষ্ঠিমধু ৬.৭৮ মিলিগ্রাম
বচ ৬.৭৮ মিলিগ্রাম
কুড় ৬.৭৮ মিলিগ্রাম
শুঠ ৬.৭৮ মিলিগ্রাম
গোলমরিচ ৬.৭৮ মিলিগ্রাম
লবঙ্গ ৬.৭৮ মিলিগ্রাম
মুথা ৬.৭৮ মিলিগ্রাম
বিড়ঙ্গ ৬.৭৮ মিলিগ্রাম
কাকড়াশৃঙ্গী ৬.৭৮মিলিগ্রাম
কটফল/কায়ছাল ৬.৭৮ মিলিগ্রাম
সূত্র: বাসকারিষ্ট, বা.জা.আ. ফ,২০০৯
বর্ণনাঃ
বাসক, যষ্ঠিমধু, পিপুল, কিসমিস, বচ, কুড়, প্রভৃতি বহুল পরীক্ষিত,প্রমাণিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত ঔষধি উদ্ভিজ্জ উপাদানের সুষম সংমিশ্রণে উৎপাদিত অডোভা সিরাপ অত্যন্ত কার্যকরী, সুসহনীয়, নিরাপদ ও তন্দ্রাচ্ছতা মুক্ত ফলপ্রদ কাশির ঔষধ । অডোভা শ্বাসনালীকে সম্প্রসারণ করে ফুসফুসের বায়ুথলি বা অ্যালভিউলসমূহ থেকে জমাটবাঁধা কফ তরল আকারে নিঃসরণে সাহায্য করে। অডোভা কফের উৎপত্তি বাধাগ্রস্থ করে, শ্বাসযন্ত্রে আক্ষেপ বা খিঁচুনী রোধ করে, ফুস্ফুস্সহ শ্বাসতন্ত্রকে শক্তিশালী করে এবং কার্যকরভাবে শ্বাসযন্ত্রের জীবাণু সংক্রমণ ও প্রদাহ প্রশমন করে। অডোভা পুরানো দীর্ঘস্থায়ী কফ-কাশি নিরাময়ের পাশাপাশি তরুণ সর্দি-কাশি, প্রতিশ্যায় বা নাক দিয়ে পানি পড়া, ইন্ফ্লুয়েঞ্জা, সর্দিজ্বর, সর্দিজনিত মাথাব্যাথা, গা-হাত-পায়ের ব্যাথা বেদনা দূর করে। অডোভা কোষ্ঠকারক, মূত্রকর ও ঘর্মকারক হিসেবে কাজ করায় দেহের অসার বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশনের মাধ্যমে দ্রত রোগমুক্তি ঘটাতে সহায়ক ভুমিকা পালন করে। অডোভার প্রাকৃতিক খনিজ, ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদানসমূহ রোগ ভোগকালিন দুর্বলতা ও পুষ্টির অভাব পূরণ করে। উৎকাশ, স্বরভঙ্গ, টনসিল প্রদাহ, ব্রঙ্কাইটিস, ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা বা হাঁপানি, কন্ঠনালির প্রদাহ এবং অ্যালার্জি ,সংক্রমণ, ক্ষয়রোগ ও ধূমপান জনিত কাশি , শুষ্ক কাশি সফলভাবে উপশম করে । অডোভা ব্যবহারে অন্যান্য কফ সিরাপের মত মুখগহবরের শুষ্কতা ও ঝিঁমুনি দেখা দেয় না ।
ভেষজ ক্রিয়া (Pharmacology):
বাসক : ভ্যাসিসিন, ভ্যাসিসিনন, ভ্যাসিসিনিন প্রভৃতি উপাদানসমৃদ্ধ বাসক উচ্চমানের কফ নিঃসারক, কফ-শ্লেষ্মা তরল করে শুকনো কফ বের করে দেয় । সর্দি-কাশি, ব্রঙ্কাইটিস, দীর্ঘস্থায়ী পুরনো কাশি, খুসখুসে কাশি, উৎকাশি, সর্দিজ্বর, বুকেবসা জমাটবদ্ধ কাশিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় । ভ্যাসিসিন শ্বাসনালীকে সম্প্রসারিত করে, শ্বাসনালীর খিঁচুনী প্রতিরোধ করে ও শ্বাসকষ্ট দূর করে।
পিপুল : পিপুল সহজে কফ নিঃসরণ করে, কফের উৎপত্তি কমায়, অ্যালার্জিজনিত কাশি, ফুসফুসজাত কাশি, শ্বাসকষ্ট, স্বরভঙ্গ, শ্বাসযন্ত্রের আক্ষেপ বা খিঁচুনি রোগে অতিশয় নির্ভরযোগ্য ভেষজ ।
দ্রাক্ষা : জৈব অম্ল, শর্করা, বিভিন্ন খনিজ উপাদান সম্বলিত দ্রাক্ষা বা কিস্মিস্ ফুস্ফুসের শক্তিবর্ধক, ফুস্ফুসের স্বাভাবিক উষ্ণতা সংরক্ষক ও কফ নিঃসারক। শ্বাস, কাশ, ফুস্ফুস্ রোগ, ক্ষয়, স্বরভেদ, সর্দিজ্বর, জীর্ণ কাশজনিত ক্ষীণতা বা কৃশতায় উপকারী ।
যষ্ঠিমধু : যষ্ঠিমধুর প্রধান উপাদান গ্লিসারজিন স্নিগ্ধকারক, কফ তরলকারক, প্রদাহনাশক ও ক্ষত নিবারক। স্নিগ্ধ-মধুর যষ্ঠিমধু কফ নিঃসারক ও কন্ঠ্য, প্রধানত শ্বসণ সংস্থানে কার্যকরী । কাশি, হাঁপানি, গলায় ব্যথা, গলায় অস্বস্তি, স্বরভঙ্গ,ফুসফুসের ক্ষত ও পার্শ্বশূল যষ্ঠিমধু সেবনে দূরীভ‚ত হয় । যষ্ঠিমধু ব্যবহারে কাশবেগ হ্রাস পায় ও জ্বর প্রশমিত হয় ।
হরীতকী : স্টেরয়েডাল ট্রাইটারপিনয়েড, জৈব অম্লাদি, অ্যানথ্রাকুইনোন, সদৃশ্য বিরেচক উপাদানের উপস্থিতির ফলে হরীতকী দেহ থেকে বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয় । চেবুলিনের উপস্থিতির ফলে সংবেদনশীল মাংসপেশীর আক্ষেপ নিবারণ করে। কফঘ্ন, কফ নিঃসারক, পাচক, হৃদ্য, বল্য, বায়ুনাশক প্রভৃত গুণের অধিকারী হরীতকী হাঁপানি, গলার ঘা দূর করে, রোগ প্রতিরোধ করে, সর্দি-কাশি জ্বরজনিত শারীরিক ধকল সহনীয়তা বৃদ্ধি করে।
বচ : কফ-বাতহর বচ হাঁপানির শ্বাসকষ্ট বা শ্বাসটান মন্দীভূত করে, কন্ঠ্য বা কন্ঠের হিতকর বচ স্বরভঙ্গ, স্বরভেদ, কর্কশতা এবং বাত শ্লৈষ্মিক কাশ, প্রতিশ্যায়, নাক দিয়ে জল পড়া কার্যকরভাবে দূর করে।
কুড় : কুড়ে বিদ্যমান সস্যুরিন নামক উপক্ষার সূষমা শীর্ষে অবস্থিত প্রাণদাকেন্দ্রের (Vegus nerve) মাধ্যমে শ্বাসনালীর প্রসারণ ঘটায় । ফলে শ্বাসবেগ হ্রাস পায়, হুপিংকাশি, তমক শ্বাস (Bronchial Asthma), শ্বাস, কাশ, হিক্কা, পার্শ্বশূল প্রশমিত হয়। কুড় শক্তিশালী জীবাণুনাশক ও প্রদাহনাশক, কার্যকরভাবে শ্বাস ও শ্বাসযন্ত্রের জীবাণু সংক্রমণ প্রশমক।
শুঁঠ : হিষ্টামিন বিরোধী উপাদানের উপস্থিতির ফলে কাশ অবদমন, সাধারণ ঠান্ডা প্রতিরোধ, তরুণ সর্দি ও বাতশ্লেমাজনিত গা-হাত-পা ব্যথা, শ্বাস, কাশ, হিক্কা, প্রতিশ্যায় শুঁঠ বা আদা অত্যন্ত উপকারী ।
গোলমরিচ : ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকবিরোধী গোলমরিচ শ্বাসতন্দ্রের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে, ত্বকের প্রদাহ ও জ্বালাভাব দূর করে, কফঘœ ও কফনিঃসারক হিসেবে কাজ করে।
লবঙ্গ : লবঙ্গে বিদ্যমান উদ্বায়ী উপাদান জীবাণুবিরোধী, প্রদাহনাশক, ব্যথা নিবারক হিসেবে কাজ করে। ইন্ফ্লুয়েঞ্জার উপসর্গ ও কফ-শ্লেমাজনিত দুর্গন্ধযুক্ত নিঃশ্বাস নিবৃত করে।
মুথা : মূত্রকর, ঘর্মকর, কফঘ্ন মুথা, পিত্ত-শ্লৈষ্মিক কাশ, কফ পিত্তজ কাশ, কফজ বমন ও শ্বাসরোগে উপকারী । অগ্নিমান্দ্য, অজীর্ণ, অরুচি, বমিভাব ইত্যাদি পরিপাক গোলযোগ নিবারক মূথা কফ কাশজনিত দুর্বলতা, ক্ষয়, অবসাদ ইত্যাদি দূর করে।
বিড়ঙ্গ : মৃদু বিরেচক বিড়ঙ্গ চিরজাত কোষ্ঠবদ্ধতা ও তরুণ কাশে ও ব্রঙ্কাইটিসে (Acute capillary bronchitis) প্রতিশ্যায় (Nasal allergy) উপকারী ।
কাঁকড়াশৃঙ্গী : কাঁকড়াশৃঙ্গী বুকের সঞ্চিত কফ নিঃসরণ করে, কফ জন্মাতে বাধাগ্রস্ত করে, গলশোথ, আলজিভ বৃদ্ধি রোধ করে এবং শ্বসণনালী, বায়ুথলি প্রভৃতি ফুস্ফুসের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের শক্তি বৃদ্ধি করে।
কটফল/কায়ছাল : উত্তেজক, কফনিবারক, বলবর্ধক কটফল বা কায়ছাল শ্বাসকষ্ট, কাশি, উৎকাশ, বিরক্তিকর শুষ্ককাশ ও গলার সুড়সুড়ি দূর করে।
কার্যকারিতা ও রোগ নির্দেশনা:
কফ, কাশ, বুকে জমাট বাঁধা শুকনো কফ, শুষ্ক কাশি, হুপিং কাশি, উৎকাশ, ক্ষয়রোগজনিত কাশি, ধূমপানের কারণে সৃষ্ট কাশি, অ্যালার্জিজনিত কাশি, হাঁপানি বা ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা, সর্দি, সর্দিজ্বর, স্বরভঙ্গ বা গলা বসে যাওয়া, টনসিলপ্রদাহ, ব্রঙ্কাইটিস, ইন্ফ্লুয়েঞ্জা, পিত্ত-শ্লৈষ্মিক কাশ, গাত্রবেদনা, কণ্ঠনালির প্রদাহ, শ্বাসযন্ত্রের দুর্বলতা, ও শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ ।
মাত্রা ও সেবনবিধিঃ
প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২-৩ চা চামচ ঔষধ দৈনিক ২-৩ বার সেব্য
অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ১-২ চা চামচ ঔষধ দৈনিক ২ বার অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেব্য।
পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াঃ
নির্ধারিত মাত্রায় সেবনে উল্লেখযোগ্য কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয়নি। অতিরিক্ত মাত্রায় সেবনে কখনো কখনো পাতলা পায়খানা, বমি ও ত্বকে ফুস্কুড়ি দেখা দিতে পারে।
প্রতিনির্দেশঃ
অডোভা সিরাপের কোন উপাদানের প্রতি অতি সংবেদনশীলতা দেখা দিলে ব্যবহার করা যাবে না। গর্ভাবস্থায় ব্যবহার না করা সম্পর্কে কোন তথ্য নেই । ক্ষতির তুলনায় লাভের বিষয় যাচাই করে ব্যবহার করা উচিৎ ।
সংরক্ষণ:
আলো থেকে দূরে, শুষ্ক ও শীতল স্থানে রাখুন । সকল ঔষধ শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।
পরিবেশনাঃ
PET বোতলে ১০০ মি.লি. অডোভা সুস্বাদু ও সুগন্ধযুক্ত, সিরাপ আকারে পরিবেশিত হয় ।