+88 017 3047 6861 [email protected]
Select Page

About Us

স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সহজাত মানবিক চাহিদা। অন্যান্য মৌলিক চাহিদার মত স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা চাহিদা সার্বজনীন ও সর্বকালীন। মানুষ সৃষ্টির ঊষালগ্ন থেকে এই চাহিদা জীব-জগতে অনুভূত হয়ে আসছে। মানুষ ছাড়াও সকল প্রাণী আপন জীবনকালে কোন না কোন সময় স্বাস্থ্য-সমস্যার সম্মুখীন হয় এবং চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে থাকে। আদিকালে জনসংখা কম ছিল। আদিগন্ত বিস্তৃত বিপুল প্রাকৃতিক বন-জঙ্গল ছিল সবার জন্য অবারিত। জ্ঞানবিজ্ঞানের উৎকর্ষতা তো দূরের কথা, তখন তা ছিল অলীক কল্পনা। আপন পরিবেশ-পরিমন্ডলে প্রাপ্ত প্রাকৃতিক উপাদান বিশেষ করে ঔষধি উদ্ভিদের লতা-পাতা, ছাল, মূল, বীজ, রস-কষ ব্যবহারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার চাহিদা পূরণ করতো আদিম মানুষ।

মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে সৃষ্টি হয় সমাজ ব্যবস্থা। সমাজবদ্ধতার সুফল পেশাদারিত্বকে পরিপুষ্ট করে। আদিম সমাজে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবাদাতার আগমন ঘটে। রোগ, অসুখ ও অসুস্থ্যতার কারণ অনুসন্ধান এবং প্রতিরোধ, প্রতিবিধান ও প্রতিকারের উপায় অনুসন্ধান চলে প্রতিবেশের উদ্ভিদ সম্পদে। অভিজ্ঞান ও অভিজ্ঞতায় পরিপুষ্ট হতে থাকে পারদর্শিতা। প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে শুরু করে, প্রাক-বৈদিক, বৈদিক কাল পরিক্রমায় নিরন্তর-নিরলস গবেষণা এবং ঋষি-মনীষীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশীয় চিকিৎসা বিজ্ঞান বর্তমান অবস্থায় উপনীত হয়েছে।

নগরায়ণের ফলে পরবর্তিতে নগর সভ্যতা গড়ে উঠে। নগরায়ণের ফলে প্রাকৃতিক বনভূমি ক্রমাগত হ্রাস পেয়ে নগরের কোল থেকে হারিয়ে যায়। ভেষজ উপাদান এইভাবে হাতের নাগালের বাইরে চলে যায়। অথচ নগরায়ণের ফলে নাগরিকের স্বাস্থ্য-চিকিৎসার চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়। তার ফলশ্রæতিতে নগর উপকন্ঠে মানব শ্রমনির্ভর ক্ষুদ্রাকায় ভেষজ উদ্ভিদের প্রাথমিক প্রক্রিয়াকরণ ও সীমিত
পর্যায়ে ঔষধ উৎপাদন কারখানা গড়ে উঠে। ভারতীয় উপমহাদেশের মাটি-মানুষের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ব্যবস্থা হিসাবে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতি বিগত প্রায় পাঁচ হাজার বছর যাবৎ অনবদ্য অবদান ও অনন্য ভূমিকা রেখে আসছে।

আয়ুর্বেদ চিকিৎসা পদ্ধতিতে দেহ, মন, আত্মা ও ইন্দ্রিয়ের সমষ্টিকে জীবন বলে বিবেচনা করা হয় এবং দৈহিক, মানসিক, সামাজিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক সামষ্টিক কল্যাণ ও উন্নয়ন সাধনের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়। বায়ু, পিত্ত ও কফ-এর পরিমিত মাত্রায় উপস্থিতি সুস্থ্যতা এবং মাত্রার ভারসাম্যহীনতা রোগের কারণ বিবেচিত হয় এবং রোগের চিকিৎসা তথা স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের মনোদৈহিক সার্বিক অবস্থার ভারসাম্যতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ভারসাম্যহীনতার মাত্রার উপর নির্ভর করে চিকিৎসার সময়কাল এবং ত্রিদোষের প্রকৃতি ও মাত্রার উপর ঔষধ নির্বাচন ও চিকিৎসা বিধান নির্ধারণ করা হয়। চিকিৎসায় বিশেষত পুরানো ও জটিল রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে রাসায়নিক সংশ্লেষিত অ্যালোপ্যাথিক ঔষধ পূর্বে প্রযুক্ত হয়ে থাকলে তার দোষ ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সংশোধনে সুস্থ্যতা লাভে বিলম্ব ঘটে। এই ক্ষেত্রে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় পূর্ণাঙ্গরূপে দোষ বিদূরিত হয় এবং চিকিৎসা সম্পূর্ণতা লাভ করে।

আয়ুর্বেদ শুধুমাত্র একটি চিকিৎসা পদ্ধতির নাম না । দর্শন, বিজ্ঞান ও কলাবিদ্যার ত্রয়ী-উপযোগে নিজস্ব মৌলনীতি ও প্রয়োগ-পদ্ধতির উপর প্রতিষ্ঠিত আয়ুর্বেদ একটি জীবনশৈলীর নাম এবং বিজ্ঞানের আকরিক হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।

জ্ঞান-বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কার ও উদ্ভাবনা আয়ুর্বেদ চিকিৎসা বিজ্ঞানকে কালে কালে সমৃদ্ধ করেছে। জ্যামিতিক হারে স্বাস্থ্য-চিকিৎসা ও ঔষধের চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে আয়ুর্বেদিক শিল্প-প্রতিষ্ঠানেও শিল্প বিপ্লবের ঢেউ লেগেছে। আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রভূত কারিগরী জ্ঞানকে সুচারু রূপে অবলম্বন করে ও সময়োপযোগী সম্মিলন ঘটিয়ে বৃহদাকায় আধুনিক আয়ুর্বেদিক শিল্প-কারখানার আর্বিভাব ঘটেছে।
প্রায় দুই শত বছরের উপনিবেশিক শাসনের যাতাকলে পড়ে আয়ুর্বেদের অগ্রযাত্রা মাঝপথে দারুনভাবে ব্যহত হয়। পশ্চিমা উপনিবেশবাদী শক্তি পশ্চিমা কৃষ্টির পাশাপাশি পশ্চিমা ঔষধ প্রচলনের বাসনায় উগ্র রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে। দেশীয় আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ব্যবস্থা বিলোপের সর্বোত্তম প্রচেষ্টা গ্রহন করা হয়। তা সত্তে¡ও ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা, কৃষ্টি-সংস্কৃতির আনুষস্থিতা এবং নানাবিধ সুবিধার অন্তর্নিহিত শক্তিবলে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতি নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝেও তার আপন অস্তিত্ব বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।
১৯৮২ সালে প্রবর্তিত ঔষধ অধ্যাদেশ বাংলাদেশে আয়ুর্বেদিক ও ইউনানী ঔষধ বিজ্ঞানের উন্নয়নে মাইলফলক হিসাবে কাজ করে। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও সরকারী পৃষ্ঠপোষকতার অঙ্গীকার দেশে আয়ুর্বেদিক ঔষধ শিল্পের অগ্রযাত্রায় অনুঘোটকের কাজ করে। আয়ুর্বেদিক ঔষধ শিল্পের ব্যাপক বিকাশ ঘটে, শিক্ষা-গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি হয়। দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান ও পরিবেশ উন্নয়নের মত আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে দেশীয় শিল্প-প্রতিষ্ঠানসমূহ অবদান রেখে চলছে।

গ্রীনলাইফ ন্যাচারাল হেল্থকেয়ার দেশের জনগণের স্বাস্থ্য-সেবার মহান ব্রত নিয়ে তার যাত্রা শুরু করে। গ্রীনলাইফ ন্যাচারাল হেল্থকেয়ারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য স্বাস্থ্য-চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় মানসম্মত ঔষধ ও স্বাস্থ্যপণ্য যোগান দেয়া শুধু নয় বরং বৃহত্তর পরিসরে মাটি-মানুষের কল্যাণ সাধন করা। আধুনিক উৎপাদন ও মাননিয়ন্ত্রণ যন্ত্রপাতি সন্নিবেশিত কারখানায় দক্ষ-প্রশিক্ষিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রত্যক্ষ তত্ত¡াবধানে আমরা বিশ্বমানের আয়ুর্বেদিক ঔষধ ও স্বাস্থ্যপণ্য উৎপাদন করে আসছি। বন-বনানীর সবুজ বৃক্ষরাজির কল্যাণ স্পর্শে আপনাদের জীবনকে সবুজ সুষমায় ভরে দিতে আমরা প্রাকৃতিক প্রতিকারকে বেছে নিয়েছি।
আমাদের উৎপাদিত নিশ্চিত ফলপ্রদ, নির্দোষ, কার্যকর গুণগত মানসম্পন্ন ভেষজ ঔষধ ইতোমধ্যে দেশের অগণিত চিকিৎসকের অটুট আস্থা ও বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। সারাদেশের অজ¯্র রোগীর রোগ নিরাময় ও ক্লেশ উপশমে অত্যন্ত আস্থা ও নির্ভরতার সাথে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মানবসেবার মহান আদর্শ নিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু। আমাদের অগ্রযাত্রায় আপনাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আমরা আশা করি। নিরাপদ ভেষজ ঔষধের মাধ্যমে সুস্থ্য-সবল সবুজ সুষমায় ভরা একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়া গ্রীনলাইফ ন্যাচারাল হেল্থকেয়ারের প্রধান লক্ষ্য। আমাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সহমর্মী, সহযোগী সবাইকে আমাদের সহযাত্রী হিসাবে প্রত্যাশা করি।

” দর্শন, বিজ্ঞান ও কলাবিদ্যার ত্রয়ী-উপযোগে নিজস্ব মৌলনীতি ও প্রয়োগ-পদ্ধতির উপর প্রতিষ্ঠিত “

“আয়ুর্বেদ একটি জীবনশৈলীর নাম এবং বিজ্ঞানের আকরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে”

ডাঃ মোঃ মিজানুর রহমান
ব্যবস্থাপনা পরিচালক
গ্রীনলাইফ ন্যাচারাল হেলথকেয়ার